Caution! Unverified Website!
The identity of this user has not yet been verified. Please make transactions at your own risk!
#এক_রাখালের_বিস্ময়কর_ঘটনা...?
#খায়বার_যুদ্ধের_ঘটনা। এই যুদ্ধে দুজাহানের সরদার নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীগণকে সঙ্গে নিয়ে ইহুদিদের সবচেয়ে বড় দুর্গ খায়বারের উপর হামলা করেন। দীর্ঘদিন দুর্গ অবরোধ করে রাখেন। খায়বারের ইহুদীদের পক্ষ থেকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে নানারকম ষড়যন্ত্র করা শোনা হত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন দুর্গ অবরোধ করেন, অবরোধ কয়েকদিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
অবরোধ চলাকালে খায়বার শহরের একজন রাখাল, ইতিহাসে যিনি "আসওয়াদ" রাখার নামে অভিহিত হয়েছেন, তিনি মনে মনে ভাবলেন, এত বড় বাহিনী নিয়ে, এত দূরত্ব অতিক্রম করে, এত কষ্ট সয়ে মুহাম্মদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] খায়বার আক্রমণ করেছেন, গিয়ে একটু জেনে আসি তাঁর বুনিয়াদি দাওয়াত ও পয়গাম কী? সে কিসের দিকে মানুষকে আহ্বান করছেন? তার ইচ্ছা-ইবা কী? রাখার ঘর থেকে বের হয়ে মুসলিম বাহিনীর তাঁবুর দিকে অগ্রসর হল। তাঁবুর কাছাকাছি একজন মুসলমানের সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হল। তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, আমি জানতে চাই তোমরা কেন খায়বারের ওপর চড়াও হয়েছ? কোন কারনে আমাদের শহরের বাসিন্দারা তোমাদের দুশমন হল? তোমাদের মূল দাওয়াত ও পয়গাম কী? মুসলমান লোকটি ছিলেন একজন সাহাবী। তিনি ইসলামের আকিদা ব্যাখ্যা করার পরিবর্তে আসওয়াদ রাখালকে বললেন, তুমি বরং আমাদের সরদার আল্লাহর রাসূলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁকেই এই প্রশ্নগুলো কর। তিনিই তোমাকে ইসলামের বুনিয়াদী দাওয়াত ও নেয়ামতের মূল পয়গাম সম্পর্কে বলে দিবেন।
আসওয়াদ রাখালের কাছে এই কথা একদম নতুন ছিল। তাঁর কল্পনাও ছিল না যে, কোন বাহিনীর সিপাহসালার কোন ফৌজের বড় অফিসার কিংবা কোনো রাষ্ট্রের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা তার মত লোককে সশরীরে দরবারে প্রবেশের অনুমতি দিতে পারে। সাক্ষাৎকার দিয়ে তাকে ধন্য করতে। তিনি সারাজীবন এটাই দেখে এসেছেন যে, ধনাঢ্য, পদস্থ ও কর্তা ব্যক্তিরা তার মত রাখালের সাথে কথা বলাকেও নিজেদের জন্য অসম্মানজনক ও অপমানকর মনে করে।
তাই তিনি বললেন, আমি তোমাদের সরদারের কাছে কিভাবে যাব? তিনি তো তোমাদের রাষ্ট্রপ্রধান। তোমাদের ফৌজের সিপাহসালার। আর আমি সামান্য রাখাল। উত্তরে সাহাবী বললেন, আমাদের সরদার নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গরিবদের প্রতি অত্যন্ত সহমর্মি ও সমব্যথী। তাঁর সবায় ও মজলিসে ধনী ও গরিবের মাঝে, শাসক ও প্রজার মাঝে, নেতা ও কর্মীদের মাঝে কোন পার্থক্য নেই। রাখার লোকটি খুবই অবাক হল। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে সামনে অগ্রসর হল। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে উপস্থিত হয়ে খুব ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞাসা করল, আমি আপনার কাছে জানতে চাই "আপনার মূল দাওয়াত কী"? আপনি কেন এই স্থানে আগমন করেছেন?
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে তাকে খুব সংক্ষেপে তাওহিদে বিশ্বাস সম্পর্কে বুঝালেন। আসওয়াদ রাখাল যখন তাওহীদের বিশ্বাস সম্পর্কে সম্যক অবগত হল, সে জিজ্ঞাসা করল, যদি কোন ব্যক্তি এই বিশ্বাস গ্রহণ করে এবং আপনার সাথে সামিল হয়ে যায়, তাহলে তার কী লাভ হবে? তিনি বললেনঃ যদি তুমি এই বিশ্বাস গ্রহণ কর, ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নাও, তাহলে তুমি আমাদের ভাই হয়ে যাবে, তোমাকে আমরা আমাদের বুকে জড়িয়ে নিব। সকল মুসলমান যেসব অধিকার পায় তুমিও তা পাবে।
আসওয়াদ রাখার অত্যন্ত আশ্চর্যন্বিত হয়ে জিজ্ঞাসা করল, আমি কিভাবে সেসব অধিকার পাব? অথচ আমি একজন সামান্য রাখাল মাত্র। আমার রঙ কালো। আমি কুৎসিত চেহারার অধিকারী। আমার দেহ থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। আমার শরীরে ময়লা জমে থাকে। এই অবস্থায় আপনারা আমাকে কিভাবে বুকে জড়িয়ে নিবেন? কিভাবে আমাকে আপনাদের সমান মর্যাদা ও অধিকার প্রদান করবেন? নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে আশ্বস্ত করলেন। আসওয়াদ রাখার বলল, যদি বিষয়টি এমনই হয় তাহলে আমি তাওহীদ ও একত্ববাদের উপর ঈমান আনব। আচ্ছা, আমাকে বলুন তো দেখি, আমার কৃষ্ণবর্ণ, কুৎসিত চেহারা, আমার দেহের ময়লা ও দুর্গন্ধের কী প্রতিকার হবে?
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি এ কথার সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুমি যদি তাওহীদের উপর ঈমান আন তাহলে দুনিয়ায় তোমার কুৎসিত চেহারা ও কৃষ্ণবর্ণের প্রতিকার না হলেও, যখন তুমি পরকালে আল্লাহর সামনে উপস্থিত হবে, তখন তোমার চেহারা শুভ্রোজ্জ্বল ও আলোকিত হবে। আল্লাহ তোমার চেহারার কালো রঙ নূর দ্বারা বদলে দিবেন। তোমার দেহের দুর্গন্ধ সুগন্ধির মাধ্যমে পরিবর্তন করে দিবেন। আসওয়াদ রাখাল বলল, যদি বিষয়টি তাই হয় তাহলে আমি ইসলাম কবুল করলাম, "আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ"।
এরপর রাখার লোকটি জিজ্ঞাসা করল, বলুন, এবার আমার দায়িত্ব কী? নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ইসলামে বহু ফরজ বিধান রয়েছে। তবে এখন নামাজের সময় না। রোজার মাসও না। তোমার উপর যাকাতও ফরয হয়নি। এখন হজের মৌসুমও না। তাই তোমাকে নামায-রোজা, হজ্ব-যাকাত কোনোটিই পালনের নির্দেশ দিতে পারি না। এখন তুমি একটি এবাদত করতে পার, তা হল খায়বারের রণাঙ্গনে হক ও বাতিলের লড়াই চলছে, আল্লাহ তা'য়ালার রাস্তায় ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা তাদের প্রাণকে উৎসর্গ করছেন। এই মুহুর্তে তোমার দায়িত্ব হল জিহাদে শামিল হয়ে যাওয়া।
আসওয়াদ রাখাল বলল, আমি যদি এই যুদ্ধে শহীদ হয়ে যাই, তাহলে আমার প্রতিদান কী হবে? নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি তোমাকে এ বিষয়ের জামানত দিচ্ছি যে, যদি তুমি এ জিহাদে শহীদ হয়ে যাও, তাহলে আল্লাহ তা'য়ালা তোমাকে সোজা জান্নাতুল ফেরদাউসে পৌঁছে দেবেন। তোমার চেহারা উজ্জ্বল করে দিবেন। তোমার দেহের দুর্গন্ধ সুগন্ধি দিয়ে বদলে দেবেন।
তিনি যেই বকরিপাল সাথে নিয়ে এসেছিলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেগুলোর ব্যাপারে বললেন, যেসব বকরী তুমি সাথে নিয়ে এসেছ, এগুলো অন্যের। আগে এগুলো ফিরত দিয়ে এসো।
চিন্তা করে দেখুন, যুদ্ধের ময়দান, শত্রুবাহিনীর বকরির পাল। তিনি (আসওয়াদ রাখাল) বকরিগুলো শত্রু-এলাকার বাইরে নিয়ে এসেছেন। ইচ্ছে করলেই তিনি (রাসূল সাঃ) বকরির পালকে গনিমতের মালের অন্তর্ভুক্ত করে নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি (আসওয়াদ রাখাল) যেহেতু এগুলোকে আমানত হিসেবে নিয়ে এসেছিলেন, আর আমানত প্রর্ত্যাপণ করা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা, তাই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন বকরি-গুলোকে কেল্লার দিকে তাড়িয়ে দাও, যাতে এগুলো শহরের অভ্যন্তরে চলে যেতে পারে এবং মালিকের হাতে গিয়ে পৌঁছতে পারে। সেমতে তিনি বকরিগুলো শহরের দিকে তাড়িয়ে দিলেন। এরপর তিনি জিহাদে শামিল হয়ে গেলেন।
দীর্ঘক্ষন লড়াই চলল। যুদ্ধ শেষে খায়বার বিজয় হল। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শহীদদের লাশ দেখার জন্য বের হলেন। শহীদের লাশের মাঝে আসওয়াদ রাখালের লাশটিও পড়ে ছিল। যখন লাশটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে আনা হল, তাঁর মোবারক চোখ অশ্রুতে ভরে উঠল। তিনি বললেন, ইনি এক আশ্চর্য ব্যক্তি! এমন এক ব্যক্তি, যিনি আল্লাহর জন্য একটি সিজদাহ করেননি। আল্লাহর রাস্তায় একটি পয়সাও খরচ করেননি। আল্লাহর জন্য অন্য কোন এবাদত করার সুযোগ তিনি পাননি। কিন্তু আমি দেখতে পাচ্ছি, ইনি সোজা জান্নাতুল ফেরদৌসে পৌঁছে গেছেন,,,, #সুবহানাল্লাহ
আমি দেখছি, আল্লাহ তা'য়ালা তাঁর চেহারার কৃষ্ণবর্ণকে নূর দ্বারা বদলে দিয়েছেন। তার দেহের দুর্গন্ধ ও ময়লা আবর্জনা সুগন্ধি দ্বারা সুরভিত করে দিয়েছেন।।।
View more on Facebook
This site was designed with Websites.co.in - Website Builder
We appreciate you contacting us. Our support will get back in touch with you soon!
Have a great day!
Please note that your query will be processed only if we find it relevant. Rest all requests will be ignored. If you need help with the website, please login to your dashboard and connect to support
Search keyword
Want to know more about us
Fill in your details and we will get in touch at our earliest convenienceWant to know more about
Fill in your details and we will get in touch at our earliest convenience